শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম
আপনি কি শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম, শ্বাসকষ্ট কি, হওয়ার কারণ এবং লক্ষণ সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা নেই। এর ফলে আপনি শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে কোনক্রমে মুক্তি পাচ্ছেন না। তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য, আজকে এই পোস্টে শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা,প্রতিকার ও ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম ছাড়াও এই আর্টিকালে শ্বাসকষ্ট কেন হয় , শ্বাসকষ্টের লক্ষণ.শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাবার খেতে হবে?,শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি উপরোক্ত টপিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্রঃশ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম।
.
ভূমিকা
শ্বাসকষ্ট হলো একটি অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থা। যখন একজন মানুষ যথেষ্ট ভালো ও আরামদায়ক ভাবে শ্বাস- প্রশ্বাস নিতে ব্যর্থ হয়, তখন তাকে এনজাইনা বা শ্বাসকষ্ট রোগ বলে। শ্বাসকষ্ট রোগকে ইংরেজিতে ডিসপ্নিয়া(Dyspnoea)বলা হয়ে থাকে।
সাধারণত শ্বাসকষ্টের তীব্রতা পরিমাপের জন্য বিভিন্ন প্রকার অনুভূতি তীব্রতা, দৈনন্দিন জীবন যাপনের প্রভাব, কর্ম এবং লাইফ স্টাইল এ কয়টি দিক বিবেচনায় শ্বাসকষ্টের তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট কেন হয়, শ্বাসকষ্ট রোগের লক্ষণ, শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম।
ইত্যাদি আর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে,আপনি যদি উক্ত আলোচনাকৃত টপিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আশা করি আপনি খুব শীঘ্রই আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি পেয়ে যাবেন।
শ্বাসকষ্ট কেন হয়
শ্বাসকষ্ট হলো একটি অসস্তিকর শারীরিক সমস্যা। আমাদের মাঝে অনেকেই বিভিন্ন সময়ে ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়, বুকের পাঁজরে ওঠানামা ফলে অশান্তি সৃষ্টি হয় , এবং দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে।
আমরা এসব উপসর্গ দেখে বলে থাকি, সেই ব্যক্তিটি শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছে। তবে মজার ব্যাপার হলো শ্বাসকষ্ট নির্দিষ্ট কোন রোগ নয়। এটি মূলত কয়েকটি রোগের উপসর্গের সমন্বয় মাত্র। সাধারণত এ সমস্যাটি শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়, সর্দি কাশি থেকে মূলত এই সমস্যাটি হয়ে থাকে আবার অনেক সময় এটি এজমা জাতীয় রোগের প্রধান উপসর্গ হিসাবে সৃষ্টি হয়ে থাকে।
যা আঞ্চলিক ভাষায় শ্বাসকষ্ট,শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে না পারা, রেসপিরাটরি ডিস্ট্রেস ইত্যাদি নামে পরিচিত। কয়েকটি কারণে শ্বাসকষ্টের মত অস্বস্তিকর সমস্যা দেখা দেয়, সেগুলো নিয়ে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো।
- সর্দি লাগলে বা সর্দি দ্বারা আক্রান্ত হলে তিব্র মাত্রাই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
- হাঁপানি বা অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা থাকলে,এই সমস্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
- অ্যাডনয়েড সমস্যা যুক্ত শিশুদের শীতকালীন সময় শ্বাসকষ্ট রোগ দেখা দেয়।
- সায়োনোসাইটিস, হার্ট ফেইলর ও নিউমেনিয়া জাতীয় রোগ থাকলে সবচেয়ে বেশি তীব্র শ্বাসকষ্ট ভুগতে পারে।
শ্বাসকষ্টের লক্ষণ
শ্বাসকষ্ট নির্দিষ্ট কোন রোগ নয়। এটি মূলত কয়েকটি রোগের উপসর্গ প্রকাশের মাধ্যম মাত্র শ্বাসকষ্ট রোগকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলঃ
- স্বল্প স্থায়ী শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা
- দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা।
স্বল্প স্থায়ী শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাঃ ধুলাবালি যুক্ত দূষিত বায়ুতে শ্বাস নিতে গিয়ে আমাদের শরীরে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর ফলে ফুসফুসে বায়ু চলাচলে বাধা প্রাপ্ত হয়, এবং শ্বাসকষ্ট সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে এ সমস্যায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ এটি নিত্যান্তই ক্ষণস্থায়ী। অর্থাৎ কোন প্রকার চিকিৎসা গ্রহণ না করলেও একটু পরেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাঃদীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টের জন্য সমস্যা এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যাজমা। বর্তমানে সময়ের শ্বাসকষ্ট রোগের প্রায় অধিকাংশ মানুষই এজমা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর এই অ্যাজমা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হল শ্বাসকষ্ট।
এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা গ্রহণ করলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তাহলে এ রোগ থেকে অল্প সময়ের জন্য হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে। শ্বাসকষ্ট সমস্যার বেশ কিছু লক্ষণ নিম্নে দেওয়া হলঃ
- শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হয়।
- বুকে টান টান ভাব অনুভূত হয়।
- শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া,খুব দ্রুত সম্পাদিত হয়।
- বুক ধড়ফড় করে বা হৃদপন্দনের হার অনেকাংশে বেড়ে যায়।
- গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময় কষ্ট হয়।
- শরীরের তৃপ্তি অনুযায়ী শ্বাস-প্রশ্বাস কার্য পরিচালনা করা যায় না।
স্বাভাবিক শ্বাস প্রতি মিনিটে কত?
শ্বাস-প্রশ্বাস আমাদের শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। শ্বাসকষ্ট সমস্যা নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে শ্বাস প্রশ্বাস প্রক্রিয়া । একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ও স্বাবলম্বী ব্যক্তি প্রতি মিনিটে প্রায় ১২থেকে ২০ বারশ্বাস নেয়।
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায়
বেশ কিছু কার্যকরী নিয়ম ও চিকিৎসা গ্রহণ করলে,শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া কিছুটা হলেও সম্ভব।প্রাচীনকাল থেকেই এই রোগ হয়ে আসছে, এবং এ রোগ নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছে সে আদিমকাল থেকেই। সেসব উপায়ের মধ্যে থেকে শ্বাসকষ্ট দূর করার পাঁচটি ঘরোয়া চিকিৎসা বা উপায় নিচে দেওয়া হলো।
ব্ল্যাককফি খেতে হবে, কারণ কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। যা আমাদের শ্বাসনালীতে উপস্থিত সম্পূর্ণ পেশিগুলোকে ঠান্ডা বা শীতল করে রাখে। শ্বাসকষ্ট যুক্ত রোগীদের জন্য এই পদ্ধতিটি সবচাইতে বেশি কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম এলাপতি বিশেষ চিকিৎসার তুলনায় বেশি কার্যকর।
ব্ল্যাক কফি আমাদের ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং শ্বাসকষ্ট সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করে।তবে এ পদ্ধতিটি সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে তাই এ পদ্ধতি যদি আপনার কাছে উপযুক্ত না হয়। তাহলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিরাময়ে এই পদ্ধতিটি এড়িয়ে চলুন ।
আদা চাঃ শ্বাসকষ্ট রোগ নিরাময় আদা চাও অনেক কার্যকারী হয়ে থাকে ।শ্বাসকষ্ট সমস্যা আক্রান্ত ব্যক্তি আদা -চা পান করলে, শ্বাসকষ্টের সংক্রমণ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও মুক্তি লাভ করতে পারে। মূলত আদাতেের রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টি ইনফ্লেমেটরির এর গুণাগুণ। যা আমাদের ফুসফুসের যে কোন প্রকার প্রদাহ বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হতে মুক্তি দেয়।
এছাড়াও মুখ দ্বারা শ্বাস নেওয়া , উচ্চ বায়ুর চাপ যুক্ত স্থানে যেমন ফ্যান এর কাছাকাছি থাকতে হবে। কারণ শ্বাস নেওয়ার মুহূর্তে বাতাসের শক্তি অনুভব হলে তা আপনার শ্বাসকষ্ট দূর করতে অনেকটা সাহায্য করে।
এছাড়াও আরো বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে যার মাধ্যমে কিছুটা হলেও শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।উপরোক্ত কয়েকটি ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করলে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হতে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাবার খেতে হবে?
শ্বাসকষ্ট কিছু কিছু রোগের উপসর্গের সমন্বয়ে গঠিত একটি অস্বস্তিকর সমস্যা।। এ সমস্যাটি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমন অ্যাজমা, নোংরা পরিবেশের বাসস্থান করা, ধুলাবালিযুক্ত দূষিত বায়ু শরীরের প্রবেশ কর। আরো বেশ কিছু কারণে শ্বাস কষ্ট সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর থেকে মুক্তির জন্য বেশ কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হয়, এর মধ্যে খাবার অন্যতম।এগুলো হলোঃ
- ওটস এবং বেরি
- নিয়মিত পালন শাক খাওয়া
- বিভিন্ন সবজির ছোপ তৈরি করে খাওয়া
- দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়া যেমন টোকফু
ইত্যাদি খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ শ্বাসকষ্ট নির্দিষ্ট কোন রোগ নয়, এটি মূলত কয়েকটি রোগ প্রকাশের উপসর্গ মাত্র। তাই এ সমস্যার প্রধান কারণ হলো দুর্বলতা, অথবা শরীরে বিভিন্ন প্রোটিনের অভাব।সুতরাং শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপরোক্ত খাদ্য গুলো খাওয়া একান্ত প্রয়োজন।
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না
শ্বাসকষ্ট জড়িত সমস্যা হলে কফি, চা বা অন্যান্য পানিয়খাওয়া যাবে না। কারণ এইসব পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে স্যারের সিলেটস নামক পদার্থ বিদ্যমান থাকে। এই সালিশিলেটর জাতীয় উপাদান গুলো দেহের প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে সক্ষম হলেও। বিভিন্ন সময় এটি মানুষের শ্বাসকষ্টো সমস্যা সৃষ্টি করে।তাই কফি বা চা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ভেজ্য তেল বা মাছের ওমেগা থ্রি ফাটি এসিড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ মাছের ওমেগাতে উপস্থিত থ্রি ফাটি এসিড অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রচন্ড পরিমাণে ক্ষতি করে। নাইট্রোজেন জাতীয় লিকুইড দেহের ক্ষতি করে এবং সর্দি জ্বরের সংক্রমণ বাড়ায় তাই নাইট্রোজেন জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
শ্বাসকষ্ট আমাদের সকলের কাছেই একটি রোগ হিসেবে পরিচিত, কিন্তু এটি কোন রোগ নয়। এটি একটি রোগ প্রকাশের মাধ্যম মাত্র। অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় শ্বাসকষ্টের মাধ্যমে। শ্বাসকষ্ট সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ হলো প্রতিকূল ও ধুলাবালি যুক্ত নোংরা পরিবেশ,যা শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের অভাব( প্রোটিন, লিপিড, ) বা অনুপস্থিতি ইত্যাদি কারণে, হয়ে থাকে।
আজকের আর্টিকালের মূল আলোচনার বিষয় হলো শ্বাসকষ্টের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রতিকার ও ব্যায়াম।এছাড়াও এই আর্টিকালে শ্বাসকষ্টের যাবতীয় বিষয় বলি সম্পর্কে বলা হয়েছে।আপনি যদি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন।
তাহলে আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।আপনি যদি নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য পড়তে ভালবাসেন। তাহলে আমার ওয়েবসাইটে এসে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন।
সলভ্ এ টু জেড এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url