গরুর পাতলা পায়খানা রোগের - লক্ষন কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
আপনি কি আপনার খামারের গরুর পাতলা পায়খানা রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। গরুর পাতলা পায়খানা রোগ সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না।তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।আজকের এই আর্টিকেলে বলা হয়েছে কিভাবে আপনি গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা করবেন।
সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো। গরুর পাতলা পায়খানার ঘরোয়া চিকিৎসা ছাড়াও এ আর্টিকেলে গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণ প্রতিকার,প্রতিরোধ এবংগরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। উক্ত আলোচনা কৃত তথ্য জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্রঃ গরুর পাতলা পায়খানা রোগের - লক্ষন কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
.
ভূমিকা
গরুর পাতলা পায়খানা একটি জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ।এই রোগটি মাঝে মাঝে আমাদের গরুর খামারে দেখা দেয়।গরুর পাতলা পায়খানা রোগটি মূলত নোংরা পরিবেশ, জীবাণুযুক্ত পাত্রে খাবার খাওয়ানো এবং নিয়মিত সেট পরিষ্কার না করা,তুলনামূলক বেশি পরিমাণ দানাদার জাতীয় খাবার খাওয়ানো ইত্যাদি কারণে এ রোগ হয়ে থাকে।
অনেকে গরুর পাতলা পায়খানা রোগ কে অবহেলা করে। তারা মনে করে এটি একটি সামান্য ব্যাপার।কিন্তু সে ধারণা পুরোপুরি ভাবে ভুল। গরুর পাতলা পায়খানা রোগকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। সাধারন পাতলা পায়খানা রোগটি সাধারণ ব্যাপার হলেও ডায়রিয়া যুক্ত পাতলা পায়খানা মোটেও সাধারণ ব্যাপার নয়।
ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানার কারনে গরুর শরীর শুকিয়ে যায় এবং গরু হাড্ডি সার হয়ে মারা ও যেতে পারে। তাই গরুর পাতলা পায়খানা রোগকে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়াই উত্তম। এর পাশাপাশি নোংরা পরিবেশ ও জীবানুযুক্ত খাবার থেকে অবশ্যই আপনার গরুকে বিরত রাখতে হবে।
আপনার গরু যদি এ রোগে কোন ভাবে আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে আপনার অন্যান্য গরুকে সংক্রমণ জনিত গরু থেকে আলাদা রাখতে হবে। আর যদি আপনার বাড়ির আশেপাশে কারো গরুর এর রোগ দেখা দেয়। তাহলে আপনার গরুর বাইরের চলাচল বন্ধ করতে হবে।
মনে রাখতে হবে গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণ শুধুমাত্র অনিয়মিত খাবার নয় এর পাশাপাশি জীবাণুযুক্ত ও নোংরা পরিবেশের কারণে ও এ রোগ হয়ে থাকে। তাই এ বিষয়ে আমাদেরকে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও কি খেলে গরুর পাতলা পায়খানা বন্ধ হয় সহ আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণ / কেন হয়?
আমাদের কাছে খুব পরিচিত একটি রোগের নাম হল গরুর পাতলা পায়খানা।এ রোগটি আমাদের খামারের গরুকে কিছুদিন পরপরই সংক্রমণ করে থাকে।তবে আমরা যদি গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে থাকি বা সাবধান হয়ে যায়। তাহলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণ হলো।
- খাবারের সাথে গরুর পেটে বিভিন্ন জীবাণু ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করা।
- পঁচা খাবার খাওয়ানো।
- অতিরিক্ত দানাদার জাতীয় খাদ্য খাওয়ানো।
- ড্রেনের পানি গরুকে খাওয়ালে গরুর পাতলা পায়খানা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ ড্রেনের পানিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। যা গরুর পেটে গেলে গরুর বদহজম সহ গরুর পাতলা পায়খানা সৃষ্টি করে।
- নোংরা পরিবেশে রাখা।খাবার পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার না করা এবং নিয়মিত জীবাণুমুক্ত না করা এছাড়াও গরুর খাবার পাত্রে পাখির মল ও গরুকে ভাত খাওয়ালে। গরুর পাতলা পায়খানা রোগের সংক্রমন বেশি দেখা দেয়।
গরুর পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষন
গরুর পাতলা পায়খানা রোগ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথাক্রমে সাধারণ পাতলা পায়খানা এবং ডায়রিয়া যুক্ত পাতলা পায়খানা।গরুর পাতলা পায়খানা রোগ সৃষ্টি হওয়ার সময় হঠাৎ করে গরুর অনিয়ন্ত্রিত পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ঔষধ প্রয়োগ করার পরেও গরুর পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে আসে না।
গরুর পাতলা পায়খানা দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। এবং গরুর খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়।এ ধরনের পাতলা পায়খানা কে ডায়রিয়া যুক্ত পাতলা পায়খানা বলা হয়।এবং ডাইরিয়া যুক্ত পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত গরুকে যদি গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা প্রদান না করা হয়, তাহলে গরু দিন দিন শুকিয়ে যায় এবং হাড্ডিসার হয়ে মারা যেতে পারে।
আর যদি গরুর সাধারণ পাতলা পায়খানা হয়। তাহলে পাতলা পায়খানা দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে না।তবে গরু খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দিবে ।এ ধরনের পাতলা পায়খানা রো ঔষধ প্রয়োগের কিছুক্ষণ সময়ের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। গরুর সাধারণ পাতলা পায়খানা রোগ সর্বোচ্চ তিন দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
গরুর পাতলা পায়খানার ঘরোয়া চিকিৎসা
গরুর পাতলা পায়খানা রোগ মূলত বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে।গরুর পাতলা পায়খানা রোগকে( যেমন সাধারণ পাতলা পায়খানা , গরুর ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানা ,গরুর ব্যালেনটিডিয়ার্স যুক্ত পাতলা পায়খানা , এবং গরুর বিপাকীয় জনিত পাতলা পায়খানা) এই কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। এক এক ধরনের পাতলা পায়খানা জন্য চিকিৎসা এক এক রকম হয়ে থাকে। নিচে গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা ব্যাখ্যা করা হলো।
গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম
গরুর পাতলা পায়খানা নিরাময়ে অধিক কাযকারি ঔষধ হলো গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট। নিচে গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম দেওয়া হলো- Tab.Marbo vet
- Amodis Vet ট্যাবলেট
- Biolact vet ট্যাবলেট
- সালফা-3 ভেট
গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা
প্রথমত গরুর পাতলা পায়খানা বন্ধ করার জন্য সালফা-3 ভেট খাওয়াতে হবে।সালফা-3 ভেট হলো গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম।৩৫ কেজির বেশি গরুর জন্য একটি করে দিনে দুবার খাওয়াতে হবে। এবং এটি দুই দিন পর্যন্ত খাওয়াতে হবে তৃতীয় দিনে যদি গরুর পায়খানা না কমে। তাহলে তৃতীয়দিন থেকে ডোজ এর পরিমাণ প্রথম দিনের তুলনায় বৃদ্ধি করতে হবে।
গরুর পায়খানা শক্ত করার জন্য জিংক সিরাপ দিনে দুইবার ১৫ থেকে ২০ মিলি খাওয়াতে হবে। যতদিন না পাতলা পায়খানা রোগ সেরে যায়। গরুর পাতলা পায়খানা রোগের কারণে গরুর খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়, এবং গরু শুকিয়ে যায় ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই গরুকে রুচিবর্ধক পাউডার যেমন এস আর, রুচি বারসিমিক্স পাউডার, দিনে এক প্যাকেট করে দুবার খাওয়াতে হবে।
গরুর পাতলা পায়খানার জন্য গরুর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল বের হয়।যার কারণে গরু খনিজ লবণ ও পানি শূন্যতায় ভোগে। এই সমস্যার জন্য গরুকে নিয়মিত দিনে ৩ থেকে ৪টি করে স্যালাইন খাওয়াতে হবে,গরুর পাতলা পায়খানা রোগ সারা পর্যন্ত।
গরুর পাতলা পায়খানা বা লুজ মোশন কে সম্পূর্ণরূপে নিরাময়ের জন্য প্রতিদিন মেট্রোনিডাজল ভেট ৬০ কেজির বেশি ওজনের জন্য ছয়টি করে, প্রতিদিন এক ডোজ করে দিতে হবে,পাতলা পায়খানা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত।গরুর পাতলা পায়খানা সারার পর, পাতলা পায়খানা যাতে পুনরায় সংক্রমণ না করে সেজন্য নিয়মিত প্রতিদিন একটি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
গর্ভবতী গরুর পাতলা পায়খানা রোগের চিকিৎসা
গরুর পাতলা পায়খানার কারণে গরুর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ নির্গত হয়, এবং গরুর শরীরে খনিজ লবণ ও পানি শূন্যতায় দখা দেয়। এর কারনে গরু অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে গাভীর ক্ষেত্রে এর প্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ এই রোগের করনে গাভীর গর্ভপাত সহ পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
এছাড়াও গাভীর দেহে পানি শূন্যতার কারনে গাভীর বাচ্চা মারা যেতে পারে । তাই গাভীর ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব এই রোগের চিকিৎসা করতে হবে । গাভীর ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো চিকিৎসা পরিলক্ষিত হয় না। গরুর পাতলা পায়খানা রোগের জন্য সকাল ও বিকাল ৮০ কেজি ওজনের বেশি, গাভীর জন্য নিয়মিত প্রতিদিন একটি করে দিনে দুইবার, দুই দিন খাওয়াতে হবে।
তিন দিনের দিন থেকে গরুর পাতলা পায়খানা আরাম হলে, তৃতীয় দিন অর্ধেক পরিমাণ সালফেট-৩ ভেট ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। আর যদি তিন দিনের দিন গরুর পাতলা পায়খানা বৃদ্ধি পায়।তাহলে প্রথম দিনের তুলনায় তৃতীয় দিন সালফেট-৩ ভেট ট্যাবলেট এর ডোজ বাড়াতে হবে।
গরুর রুচি বর্ধক পাউডার প্রতিদিন এক প্যাকেট করে দিনে একবার খাওয়াতে হবে।গরুর পাতলা পায়খানা নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত।জিংক সিরাপ লিকুইড প্রতিদিন ১০০ মি.লি করে দিনে একবার খাওয়াতে হবে।গাভী যেন পানি শূন্যতা ও খনিজ লবণ শূন্যতায় না ভোগে,সেজন্য গরুর পাতলা পায়খানা না কমা পর্যন্ত দিনে দুই থেকে তিনটা করে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
গরুর পাতলা পায়খানা সারার পর নিয়মিত ১০ থেকে ১৫ দিন একটি করে Biolact vet ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে।
ডায়রিয়া জনিত গরুর পাতলা পায়খানা রোগের চিকিৎসা
ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানা খুবই মারাত্মক একটি রোগ। এ ধরনের পাতলা পায়খানা হলে দ্রুত গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা করতে হবে, কারণ দ্রুত চিকিৎসা না করলে গরু দিন দিন শুকিয়ে যায়। এবং কঙ্কাল সার হয়ে মারা যেতে পারে।
- এই রোগের কারণে গরুর খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন দুইবার করে রুচিবর্ধক পাউডার, যেমন রিমিক্স পাউডার এক প্যাকেট করে খাওয়াতে হবে। এতে গরুর পুনরায় খাবার রুচি ফিরে আসবে।প্রতিদিন ১০০ মিলি করে দিনে একবার জিঙ্ক লিকুইড খাওয়াতে হবে।
- গরুর পাতলা পায়খানার মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেলে,প্রতিদিন এক থেকে দুইবার এক প্যাকেট করে আর এস ডাইভেট ও এক গ্রাম করে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট নিয়ে দুটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
- গরুর পাতলা পায়খানা হলে গরুর খনিজ লবণ ও পানি শূন্যতায় দেখা দেয়। আর এ পানি শূন্যতা রোধ করার জন্য গরুকে প্রতিদিন ইলেকট্রোলাইট এক প্যাকেট ২০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। যাতে পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত গরুর পানিশূন্যতা রোধ হয়।
- ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য নিয়মিত ১০ গ্রাম করে দিনে দুইবার Biout পাউডার খাওয়াতে হবে। গরুর পাতলা পায়খানা রোগ সারার পযন্ত।
- গরুকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত প্রতিদিন একটি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন পর্যন্ত খাওয়াতে হবে।
গরুর পাতলা পায়খানা রোগের সঠিক ও কার্যকরী ঔষধ
গরুর পাতলা পায়খানার সঠিক ও কার্যকরী ঔষধ হলো-,খাবার স্যালাইন,Sulphadin vet ট্যাবলেট ,Amodis Vet ট্যাবলেট ও Marbo vet ট্যাবলেট। গরুর পাতলা পায়খানা রোগে উপরোক্ত ওষুধ গুলো সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। নিচে গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম সহ ট্যাবলেট গুলো ব্যবহারের নিয়ম পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো।
- Tab.Sulphadin Vet পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত গরুর ওজন যদি ৮০ কেজি হয়ে থাকে তাহলে এই ট্যাবলেটটি ১টি করে দিনে ৩ বার খাওয়াবেন।
- Tab.Amodis Vet ৮০ কেজি ওজনের গরুর জন্য এই ট্যাবলেট একটি করে দিনে তিনবার খাওয়াবেন।
- Tab.Marbo vet পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত গরুর ওজন যদি ১০০ কেজি হয়ে থাকে তাহলে উক্ত গরুর জন্য প্রতিদিন একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিন বার খাওয়াবেন।
গরুর পাতলা পায়খানার জন্য কার্যকারী ট্যাবলেট এর নাম ও ব্যাবহার
গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম হল সালফাডিন ভেট।সালফাডিন ভেট এর কাজ হলো গবাদি পশুর পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যা যেমন ডায়রিয়া , বদহজম , রক্ত আমাশয় ইত্যাদি রোগের নিরাময়।সালফাডিন গরুর পাতলা পায়খানা জনিত সবচেয়ে দ্রুত কার্যকরী ও রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
গরুর পাতলা পায়খানা হলে আমরা প্রায় সবাই সালফাডিন ভেট ট্যাবলেট ব্যবহার করি।কারণ এই ট্যাবলেটটি খুব দ্রুত পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যা নিরাময় করে। তবে আমরা অনেকেই সালফাডিন ট্যাবলেট এর সঠিক ব্যবহার জানি না। আজকের এই টপিকে সালফাডিন এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত গরুর ওজন যদি ৮০ কেজি বা ৮০ কেজির উপরে হয়। তাহলে দিনে একটি করে সালফাডিন ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। সালফাডিন ট্যাবলেট দিনে ১ টি করে সর্বোচ্চ তিন বার খাওয়ানো যেতে পারে। আর অবশ্যই সালফাডিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় গরুকে দিনে ৪ থেকে ৫ বার খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
গরুর পাতলা পায়খানা যেহেতু ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু ঘটিত একটি রোগ। তাই পাতলা পায়খানা রোগে কোনো গরু আক্রান্ত হলে, রোগান্ত গরুকে অবশ্যই সুস্থ গরু থেকে আলাদা রাখতে হবে। আর যদি আপনার এলাকায় এ রোগ দেখা দেয়। তাহলে আপনার গরুর বাইরে চলাচল বন্ধ করতে হবে। গরুর খাবার পাত্র,
বাসস্থান সব সময় পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং কিছুদিন পর পর জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। গরুর খাবারের কোন ভাবেই পশু পাখির মল মিশতে দেওয়া যাবে না।এবং সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। উপরোক্ত প্রতিরোধ প্রতিকার ও চিকিৎসার মাধ্যমে আশা করি আপনার গরুর সকল প্রকার পাতলা পায়খানা জনিত রোগ দূর করা সম্ভব হবে।
এবং আপনার গরু যদি ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ মনে রাখবেন যে সব ঔষধই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত। পাতলা পায়খানার কারণে অনেক সময় গরু হাড্ডিসার হয়ে মারাও যেতে পারে।
তাহলে আপনি আপনার খামারে খুব বড় একটি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই গরুর পাতলা পায়খানা রোগ দেখলে অবহেলা না করে, দ্রুত আক্রান্ত গরুকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে আগ্রহী হলে আমার ওয়েবসাইটে এসে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ
সলভ্ এ টু জেড এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url