স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনি কি স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না? তবে আপনি এই গরমে শরীরের ক্লান্তি ও পানি স্বল্পতা দূর করার জন্য প্রতিনিয়ত স্যালাইন খাচ্ছেন? এই কারণে আপনি কি অনেক চিন্তিত! তাহলে চিন্তার কিছু নেই। আজকের আর্টিকেলে স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও স্যালাইন খাওয়ার নিয়ম, লো প্রেসারে স্যালাইন খাওয়া যাবে কিনা,স্যালাইন কত ঘন্টা পর পর খেতে হবে ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি, আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন “ইনশাআল্লাহ”।
সূচিপত্রঃস্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা .
ভূমিকা
খাবার স্যালাইন সর্বপ্রথম তৈরি হওয়ার পর থেকেই আমরা,আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে ডায়রিয়া নিরাময় খাবার স্যালাইন ব্যবহার করি, যা ডায়রিয়া নিরাময় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আসছে। খাবার স্যালাইন এর জন্য ডায়রিয়া রোগ থেকে নিরাময় লাভ করেছে কোটি কোটি মানুষ।
আমরা যখন কোন কাজ করি তখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের শরীর ঘেমে যায় এবং শরীরে পানি শূন্যতার অনুভূতি প্রকাশ পায়, যা আমরা স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করি। তবে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা একটু ঘামলে অথবা কাজ করে ক্লান্ত হলে সাথে সাথে স্যালাইন খেতে শুরু করে। আবার অতিরিক্ত গরমে অনেকেই দিনে দুই থেকে তিনটা পর্যন্ত স্যালাইন খেয়ে থাকে।
আমরা জানি স্যালাইন আমাদের শরীরের রক্তের লবণ বা খনিজ লবণের ক্রিয়া বৃদ্ধি করে।যা সবার জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। ধরুন কারো ব্লাড প্রেসার রয়েছে এবং সে বিনা কারণে স্যালাইন খাচ্ছে সেক্ষেত্রে তার ব্লাড প্রেসার মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাবে তাই না ?
তাই স্যালাইন খাওয়ার পূর্বে স্যালাইনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। কারণ স্যালাইনের যেরকম উপকারিতা রয়েছে ঠিক একই ভাবে এর উপকারিতা রয়েছে।
খাবার স্যালাইন কত ঘন্টা পর পর খেতে হয়?
খাবার স্যালাইনে রয়েছে খনিজ লবণ যা আমাদের শরীরের রক্তের লবণাক্ততা ক্রিয়া বৃদ্ধি করে রক্তের প্রেসার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই বিনা কারণে খাবার স্যালাইন খাওয়া যাবে না। আপনি যদি ডায়রিয়া অথবা লো প্রেসারে ভোগেন, তাহলে দিনে সর্বোচ্চ দুটি স্যালাইন খেতে পারবেন।এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
স্যালাইন খাবার সময় একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন, স্যালাইন গরম পানিতে তৈরি করা যাবে না। ঠান্ডা পানিতে স্যালাইন তৈরি করতে হবে এবং তৈরি করার ১২ ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে।১২ ঘন্টা পার হয়ে গেলে তৈরি করা স্যালাইন কে ফেলে দিতে হবে।
শরীর দুর্বল হলে কি স্যালাইন দিতে হবে?
যদি প্রেসার কম হওয়ার কারণে আপনার শরীর দুর্বল হয়, তাহলে আপনি স্যালাইন খেতে পারেন। কারণ স্যালাইনে রয়েছে খনিজ লবণ যা রক্তের ক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং প্রেসার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে, যার কারণে আপনার শরীর দুর্বল হলে আপনি স্যালাইন খেতে পারবেন, তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
খাবার স্যালাইন খাওয়ার সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত,কারণ খাবার স্যালাইনের উপকারিতা এর পাশাপাশি অপকারিতা ও রয়েছে। তাই অযথা খাবার স্যালাইন খেয়ে বিপদ ডেকে আনার কি দরকার? খাবার স্যালাইন খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই খাবার স্যালাইনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা একান্ত জরুরী। নিচে তা দেওয়া হলোঃ
খাবার স্যালাইন এর উপকারিতা
খাবার স্যালাইন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি আমাদের দেহে পানি শূন্যতা পূরণ করে, শরীরের ক্লান্তি দূর করে, এবং কাজ করার ক্ষমতা ফিরিয়ে আনে। তবে স্যালাইনের উপকারিতা বিশেষ করে ডায়রিয়া রোগীদের দেহে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়,
এছাড়াও যারা লো প্রেসারের ভুগে থাকেন তাদের লো প্রেসার কে স্বাভাবিক করতে স্যালাইন অত্যন্ত কার্যকরী। ডায়রিয়া রোগীর দেহে পানি স্বল্পতা ও খরিদ লবণের ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষভাবে কাজ করে।
স্যালাইন খাওয়ার অপকারিতা
স্যালাইনের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক একই ভাবে এর অপকারিতা ও রয়েছে। স্যালাইনের ভুল ব্যবহারে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা, তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক স্যালাইন খাওয়ার অপকারিতা বা খারাপ দিক সম্পর্কে।
আমরা এই গরমে, আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য প্রতিনিয়ত স্যালাইন খেয়ে থাকি, আসলে এটা একদমই উচিত নয়। খাবার স্যালাইন রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা খনিজ লবণ যা আমাদের রক্তের ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।আর আপনি প্রতিদিন স্যালাইন খেলে বা অযথা স্যালাইন খাওয়ার ফলে আপনার হার্টে সোডিয়াম ক্লোরাইড এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হতে পারে যা আপনাকে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর করতে পারে। তাই অতিরিক্ত বা অযথা স্যালাইন খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন, পাশাপাশি বিশেষ সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে স্যালাইন খাবেন।
স্যালাইন খেলে কি প্রেসার বাড়ে
বর্তমানে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে,স্যালাইন খেলে কি প্রেসার বাড়ে? আজকের এই টপিকে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যেহেতু স্যালাইনে রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড যা রক্তের ক্রিয়া বৃদ্ধি করে আর এ রক্তের ক্রিয়ার উপর নির্ভর করে প্রেসার। তাই স্যালাইন খেলে প্রেসার বাড়ে কথাটি সত্য, তবে আপনি যদি উচ্চ ব্লাড প্রেসারে ভোগেন তাহলে স্যালাইন খাওয়া পরিহার করুন।
গরমে স্যালাইন খাওয়া কি ক্ষতিকর?
গরমের সময় আমাদের শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘামে,যার ফলে আমাদের দেহে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়।এছাড়াও অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে ক্লান্তি আসে, এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য আমরা অনেকেই স্যালাইন খেয়ে থাকি এবং এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পায়। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে গরমের সময় স্যালাইন খাওয়া ক্ষতিকর নয়। তবে এ বিষয়ে সঠিক ধারণা পেতে হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
স্যালাইন খাওয়া ক্ষতিকর কেন?
স্যালাইন যেমন আমাদের শরীরের, পানি শূন্যতা, পানি স্বল্পতা, ক্লান্তি, লো প্রেসার জনিত সমস্যা ইত্যাদি নিরাময় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ঠিক একই ভাবে অধিক বা বেশি স্যালাইন খাওয়ার ফলে সৃষ্টি হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, হাই প্রেসার, হৃদরোগ সহ আরো বেশ কিছু জটিল সমস্যা।সেক্ষেত্রে স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা না জেনে স্যালাইন খাওয়া অত্যন্ত ক্ষতিকর।
স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠকেরা আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে ঔষুধের দোকান থেকে স্যালাইন না কিনে কিভাবে বাসায় স্যালাইন তৈরি করবেন। এছাড়াও স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে।
স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা” আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে আপনার পরিচিত বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন, ধন্যবাদ।
সলভ্ এ টু জেড এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url